প্রতিবন্ধিতা বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন- শারীরিক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শ্রবণ প্রতিবন্ধী, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ইত্যাদি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী
যাদের হাত কিংবা পা অসম্পূর্ণ, অবশ, দুর্বল থাকে, দেহের গঠন স্বাভাবিক নয় বা দেহের কোনো অংশ ব্যবহারে অক্ষমতা থাকে, যার ফলে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অসুবিধা হয়, তারাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। যেমন- পায়ের গঠনে ত্রুটি থাকলে চলাচলে এবং হাতের গঠনে ত্রুটি থাকলে কাজ করতে অসুবিধা হয়। বুদ্ধিগত কোনো সমস্যা না থাকলে শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু সাধারণ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে পারে। তাদেরকে শারীরিক সমস্যার জন্য বিভিন্ন সহায়ক উপকরণের সহায়তায় চলাফেরা করতে হয়। যেমন-ক্রাচ, ওয়াকার, হুইল চেয়ার ইত্যাদি। সেক্ষেত্রে চলাচলের সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় জায়গায় র্যাম্প (সিঁড়ির স্থানগুলোতে ঢালু রাস্তা)-এর ব্যবস্থা করলে তাদের চলাচলে বিশেষ সুবিধা হয়।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী
চোখে দেখতে পারে না বা চোখে দেখায় এমন ধরনের সমস্যা থাকে যার কারণে জীবনের প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে অসুবিধা হয় এবংযারা চোখে আংশিক বা পুরোপুরি দেখতে পায় না তারাই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের দেখতে সমস্যা হয় বলে চলাফেরা ও কাজকর্ম ধীরে হয়, এসব অসুবিধা তাদেরকে পরনির্ভর করে রাখে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার মাত্রা বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন-অল্প মাত্রার দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা এবং আংশিক মাত্রার দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা। অল্প মাত্রার প্রতিবন্ধীরা অন্ধকার ছাড়া কোনো কিছুই দেখে না বা উজ্জ্বল আলো আসার গতিপথ বলতে পারে। এরা অঙ্ক, সংখ্যার ধারণা, শব্দ ভান্ডার এসব ক্ষেত্রে স্বাভাবিক শিশুর মতোই হয়। তারা স্পর্শ দিয়ে বস্তু চেনে, বস্তুর নাম শেখে। জন্মগত দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা অন্যদের সাথে তাদের পার্থক্য বুঝতে পারে না, যেসব দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু পরবর্তী সময়ে অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কারণে দৃষ্টি হারায় তাদের মনের কষ্ট অনেক বেশি। আংশিক মাত্রার প্রতিবন্ধীরা দূরের জিনিস দেখতে পারে না। কাছের জিনিস অস্পষ্ট দেখলেও কাজ করতে তাদের অসুবিধা হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা পদ্ধতির নাম ব্রেইল পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে স্পর্শের মাধ্যমে উঁচু ফোঁটা দিয়ে বর্ণ ও সংখ্যা তৈরি করে লেখাপড়া করানো হয়।

শ্রবণ প্রতিবন্ধী- যাদের শোনার ক্ষমতায় ঘাটতি, যার কারণে কথা শুনতে বা কথা বলার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এদের ক্ষেত্রে বধির বা কালা এবং কানে খাটো ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়। একটি স্বাভাবিক শিশু শব্দ ও কথা শোনে, তারপর তারা কথা বলতে শেখে। যেহেতু শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা শব্দ বা কথা শুনতে পারে না, তাই তারা কথা বলতে শেখে না। জন্ম থেকেই বা কথা শেখার আগেই এ সমস্যা দেখা দিলে ভাষার বিকাশ হয় না। এই সমস্যা অল্প বা গুরুতর হতে পারে। অল্প মাত্রার সমস্যা হলে তারা জোরে কথা বললে কিছুটা শুনতে পারে। গুরুতর শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা থাকলে কোনো শব্দই শুনতে পায় না। তারা কথা বলার পরিবর্তে অঙ্গভঙ্গি দিয়ে বা ইশারায় নিজের চাহিদা প্রকাশ করে। এদের কথা কেউ বুঝাতে পারে না বলে সব সময়ই এরা হতাশাগ্রস্ত থাকে।
Read more